ঘরের কোনায় কোনায় থাকা ময়লা পরিষ্কার করা নিয়ে অনেক ঝক্কি পোহান অনেকেই। তবে জানেন কী? রান্নাঘরের খুব সাধারণ জিনিস দিয়ে ঘরের কোনায় লুকিয়ে থাকা ময়লা দূর করা যায়। বিভিন্ন গবেষণায় যায় বাজারে পাওয়া রাসায়নিক উপাদানযুক্ত পরিষ্কারকের চাইতে এগুলো ব্যবহার নিরাপদ।
চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো সম্পর্কে-
লেবু
লেবুর রসে থাকা অ্যাসিড ময়লা এবং জং সহজেই তুলে ফেলে। বিশেষ করে লবণের সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা যায় শক্তিশালী স্ক্রাব।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক প্রাকৃতিক পরিষ্কারবিষয়ক লেখিকা ক্যারিন সিগেল-মেয়ার রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “লেবুর রস আর লবণ মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করলে ট্যাপ বা কল, সিঙ্ক এমনকি ‘গার্বেজ ডিসপোজাল’ও ঝকঝকে হয়ে যায়।” পুরোনো ট্যাপ বা বারান্দার রেলিং পরিষ্কার করতে লেবু ও লবণ ব্যবহার করা যায়। রোজকার পরিষ্কারক থেকে এটা অনেক বেশি কার্যকর।
উদ্ভিজ্জ তেল
অলিভ অয়েল বা সূর্যমুখীর তেল শুধু রান্নার উপকরণ নয়; এর মসৃণতা ঘষামাজায় ভালো কাজ করে। বিশেষ করে পুরানো কাঠের আসবাব ও চামড়াজাত পণ্যে এর জাদুকরি প্রভাব রয়েছে।
‘গ্রিন ক্লিন’ বইয়ের সহ-লেখিকা লিন্ডা ম্যাসন হান্টার একই প্রতিবেদনে বলেন, “তেল পুরানো কাঠে আর্দ্রতা ফিরিয়ে এনে চেহারা পাল্টে দেয়।”
চামড়ার জুতো কিংবা কাঠের আসবাব তেল দিয়ে ঘষলে নানান দাগ দূর হয়, যা রাসায়নিক উপাদান যুক্ত পরিষ্কারকে হয়তো সম্ভব না।
সাদা ভিনেগার
ভিনেগারে থাকা উপাদান ফাঙ্গাস, ছত্রাক এমনকি সালমোনেলা বা ই.কোলাই’র মতো ব্যাক্টেরিয়া গজানোর পরিবেশ নষ্ট করতে পারে। এর সাহায্যে কফি মেইকার, ড্রেন এমনকি শাওয়ার হেডও পরিষ্কার করা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ‘এনভায়রনমেন্টাল ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডব্লিউজি)’-এর গবেষণা অনুযায়ী, ভিনেগার ই.কলাই ও সালমোনেলা জীবাণু ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ধ্বংস করতে পারে।
বেইকিং সোডা
সোডিয়াম বাইকার্বোনেট বা বেইকিং সোডা ময়লা ও দুর্গন্ধ দূর করতে পারদর্শী। কাপের দাগ থেকে শুরু করে সোফার দুর্গন্ধ— সব কিছুতেই কার্যকর। পছন্দের চায়ের কাপের দাগ কোনোভাবেই না উঠলে বেইকিং সোডা ব্যবহার করে এক রাত ভিজিয়ে রাখলেই দাগ খুব দ্রুত চলে যাবে।
টুথপেস্ট
সাধারণ টুথপেস্টে থাকে হালকা স্ক্রাবিং ও জীবাণুনাশক উপাদান, যা ধাতব ও প্লাস্টিকের সরঞ্জামে জৌলুস ফিরিয়ে আনে। সিগেল-মেয়ার বলেন, “হোয়াইটেনিং বা টার্টার কন্ট্রোল টুথপেস্ট ব্যবহার না করাই ভালো। এতে ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে।”
লবণ
লবণ খুব ভালো ‘স্ক্রাবিং’ উপাদান। কাচের জিনিসপত্র থেকে শুরু করে ওভেন পরিষ্কারে পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। ওভেনে খাবার কিছু পড়লে সাথে সাথে লবণ দিয়ে ঢেকে দিয়ে পরে ঠাণ্ডা হলে কাপড় দিয়ে মুছে ফেললেই পরিষ্কার হয় অনেকটাই।
সাদা পাউরুটি
সাদা পাউরুটির টুকরা দিয়ে ধুলাময়লা সরিয়ে নেওয়া যায়, বিশেষ করে তৈলচিত্র বা পেইন্টিং থেকে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘ন্যাশনাল গ্যালারি’ তাদের রক্ষণাবেক্ষণে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে।
কেচাপ
কেচাপে থাকা অ্যাসিডিক উপাদান তামা ও ব্রাসের দাগ তুলতে সাহায্য করে। রান্নাঘরের পুরানো পাতিল বা হাঁড়ি পরিষ্কারে এটি এক কার্যকর সমাধান।
চাল
বোতলের মুখে ব্রাশ ঢুকানো সম্ভব না হলে চাল দিয়ে পানি মিশিয়ে ঝাঁকিয়ে নিলেই ময়লা সাফ।
চা
গাঢ় কালো চা পানিতে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে তাতে বাগানের-যন্ত্র ভিজিয়ে রাখলে মরিচা সহজেই উঠে যায়।
কর্নস্টার্চ বা কর্নফ্লাওয়ার
তেল পড়া জায়গায় কর্নস্টার্চ ছিটিয়ে রেখে ৩০ মিনিট পর ভ্যাকুয়াম করলেই দাগ অনেকটাই উঠে যায়।
খুলনা গেজেট/জেএম